রুবাইদ মেহেদী

নিজেকে যায় না চেনা, আয়নার মিথ্যে শ্লোগানে...

রুবাইদ মেহেদী

আলো, তোমাকে…

চিঠি

জুঁই,

তুমি ঘুমুচ্ছো পাশের ঘরে। এ ঘরে সারাটা রাত জেগে সকালে অফিস লেটের ভয়ে কফির মগ হাতে আমি ল্যাপটপে। একটু পর তোমার ঘুম ভাঙবে, একটা জ্যান্ত পুতুলের মতো বোজা চোখ আর ফোলাগাল নিয়ে ঢুলুঢুলু করে এই ঘরে এসে আমার জামা ধরে টানতে থাকবে তুমি। আর বেড়ালের বাচ্চার মতো ইই… ইই… করতে থাকবে।
আমি গুলুমুলুমুলু করে তোমাকে কোনভাবে আরেকদফা ঘুমুতে পাঠিয়ে আবার বসবো টেবিলে। বসে মুচকি শব্দহীন হাসি নিয়ে লুটোপুটি খাবো।

হয়তো, আমরা দু’জনের কেউই আমাদের জীবনের ঘটনাস্রোত যেভাবে বয়েছে, সেরকমটা চাই নি। তবু, ঘুরে ফিরে কোন না কোন ভাবে আমরা মিলে গেছি আর অনেক হই-হট্টগোল আর চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে দিনশেষে সুখী হওয়াটা আমাদের অভ্যেস হয়ে গেছে। আমরা খুব তাড়াতাড়ি শিখে গেছি পরস্পরের স্বাতন্ত্র্যকে শ্রদ্ধা করতে, মন্দ আর ভালো লাগার খেয়াল রাখতে, রেগে যেতে (আমি বেশি) ও রাগ ভাঙাতে (তুমি বেশি :P), একটা রান্নাঘরে মিলেমিশে রান্না করতে(প্রয়োজনে পিঁয়াজ ছাড়া), আরও কতো কি!!!

মনে আছে, দু’বছর মতো আগেও তুমি আমায় একটা নক দিতে কতোবার করে ভাবতে! কিংবা, সেই গল্প গল্প খেলা। একটা লাইনের পরে আরেকটা লাইন জুড়ে গল্পের কাহিনী এগিয়ে নেবার খেলা। জানুয়ারিতে যেদিন আমাদের প্রথম দেখা হলো, তার আট বছরেরও আগে আমাদের দেখা হবার কথা ছিলো! অথচ, সেই আটবছরে কতো কাছাকাছি থাকার মাঝে একবার আমি তোমায় দেখেছি, আর তুমিতো দেখোই নি!! এক দিক থেকে মনে হয়, ভালোই হয়েছে। না হলে, জল কোন দিকে যেতো, কে জানে!!

বিয়ের আগে বলেছিলাম, চিঠি দিও। দাও নি কখনো। জানি, সময় করে উঠতে পারবে না। সেদিন বড্ড অভিমান নিয়ে আমার বউটিকে আটপৌরে শাড়ির কুঁচির মতো পৌনঃপুনিক বলেছিলাম। মেয়ে চকচক চোখ নিয়ে আমি কিচ্ছু বুঝিনি বলে ঠিক তলে তলে ঠিকটাই বুঝে নিয়েছে।

আমার তোমার চুলের গন্ধ, বুকের ও’ম ভালো লাগে। আমার তোমাকে ভালো লাগে আর বেশরমের মত, যেখানে সেখানে, আমি আমার বউকে ভালোবাসি বলে ফ্যাক করে হেসে ফেলতে ভালো লাগে।

এলইডি-র পৃথিবীতে আমার উজ্জ্বল টিউবলাইট,

ভালো থেকো সোনা।

ভালোবাসি।

ভালোবাসি।

নাও, শঙ্খ ব্যানার্জীর গান শোনোঃ

Facebook Comments