রুবাইদ মেহেদী

নিজেকে যায় না চেনা, আয়নার মিথ্যে শ্লোগানে...

রুবাইদ মেহেদী

যে আমাকে কাম শেখালো

নিষিদ্ধ পংক্তিমালা
প্রেম
বোধ

যে আমাকে কাম শেখালো, খামের মতোন নারীর ভাঁজে
পরত পরত চিঠির আবেগ, পড়তে দিলো আঁচল ফেলে,
নাভির স্বেদে নোনতা জিভে তীব্র মাতাল মধ্য রাতে
তৃষ্ণাভাঙা চুমুক হলো, মাঝবয়েসী যোনীর খাঁজে
নিষিদ্ধ সব ঘ্রাণের খাতার বর্ণমালা যে বোঝালো,
নগ্ন বুকের ওমের ঝাঁঝে, ক্লান্ত চুমু কাঁধের কাছে,
শরীর মেলে শরীর পুঁজার মন্ত্রপাঠের দমের ধাঁধা,
ছকে ছকে মিলিয়ে দিলো,
স্তনের বীণায় সুর তোলাতে, প্রশ্রয় যার হাত পাকালো,
থুতনি গলায় নাক ডুবিয়ে, গন্ধ নিতে, কামড়ে দিতে,
রিপুর দাহন যে বোঝালো,
যে আমাকে কাম শেখালো,
কাম শেখাতে জলের মতোন
অঝোর শরীর ভাসিয়ে দিলো!
তারে আমি কেমনে ভুলি!

তারে আমি কেমনে ভুলি- যে আমাকে চিনিয়েছিলো,
চুল সরিয়ে মেখলা পিঠে, খোঁপা ভাঙার উত্তেজনা-
সফেদ নরম উপত্যকায়, আলতো করে দাঁত বসাবার
উষণ কুসুম ভদ্রতাজ্ঞান, দু-আঙুলে ব্রায়ের বোতাম
খুলতে চাওয়ার ধুকপুকানি, ঠোঁটের ধারে ঠোঁট কামড়ে,
মিহি জিভের নিপুন সেলাই,
ভিন্নগ্রহী চুমুর সোয়াদ।

ছড়িয়ে দিয়ে দিয়ে উরুর মোহন, গোপন ত্রিভুজ ফুলেল করে
যে আমাকে হাতে ধরে নামিয়ে দিলো খুব ভিতরে,
ফিসফিসিয়ে কানের কাছে, যে শেখালো ডুবসাঁতার।
তীক্ষ্ণ চোখে চোখ বিঁধিয়ে, কোমর-কোমর খুব মিশিয়ে
শৃঙারে আর শীৎকারে যে, নেচে নেচে নাচ দেখালো,
নাচের শেষে বাদলা শরীর, শরীর দিয়ে খুব জড়িয়ে
শরীর খেলার মানচিত্রে ঝড়ের দাপট যে বোঝালো।

প্রথম নারী, প্রথম শরীর, প্রথম চুমুর দমকা হাওয়া,
যায় না ভোলা, নষ্ট পুরুষ! যতই যমুক হিসেব-নিকেশ!
পাপের খাতা বউনি হলো, যে হাত ধরে, বউ হলো না-
সেই নারীটির, আর্দ্র শরীর, বুকের ভেতর ঠিক থেকে যায়!
পাপের খাতায় পাপ থাকে না, কামের হিসেব প্রেম হয়ে যায়!


কামের হিসেব প্রেম হয়ে যায়,
সেই নারীটি খাম হয়ে যায়
খাম চলে যায় কোন ঠিকানায়, কেউ জানে না!
সেই নারীটির বুকের ভিতর ক্ষুদ্ধ ঝড়ের অস্থিরতা
কেউ লেখেনা, কারুর খাতা, সে দায় নেবার দম রাখে না।
সেই নারীটির বয়েস বাড়ে, শরীর ভাঙে, সেই নারীটি
মধ্যরাতে মাঝকপালে শুকনো চুমু হাতড়ে ফেরে,
হাতের ভেতর হয়তো কারো হাতের তালু হাতড়ে ফেরে।
আর কিছু নয়, বুকের ভিতর, আরেকটা বুক হাতড়ে ফেরে।

সেই নারীটি, কেবল ফেরে, নিজের কাছে, নিজের থেকে।

_________________________________________ রাত-ভোর ৫টা, ডিসেম্বর ৪, ২০১৯।

Facebook Comments