রুবাইদ মেহেদী

নিজেকে যায় না চেনা, আয়নার মিথ্যে শ্লোগানে...

রুবাইদ মেহেদী

Archives

অনুস্বর

কব্জা, কল আর খল খেয়ালীর উল্লাস ভরা শহরে জ্বালা আর জ্বালানীর হররোজ বিকিকিনি, সেইই স্বাভাবিক। ফুল বা মুকুলের, হুম, দু’কড়ি দাম হয়তো আছে, কিন্তু আবেদন? সে কেবল রাজশ্রীর!চির যৌবনা, চির আবেদনময়ী রাজশ্রী, এই শহরে, এই দেশে, আজকের এই পৃথিবীতে। মানুষের মাথা তাই নুয়ে নুয়ে ছুঁয়ে যায় ঈশ্বরী-অবতার-দেবী পা। রোজকার ছাপোষা এই মিস্তিরিও তাই কবি হতে

চিড়

খুব বেশি গভীরে যেতে নেই।দমের হিসেব ভুলে গেলেঅথবা পালের হাওয়া, বদলালে দিক!ফিরে আসা দায়। জলের আঁচল পেলে, দিশাহীন খোলাআসমান মেলে দিলে পেলব অঙ্গন-“যতই গভীরে যাই মধুযতই উপরে যাই নীল”! আমারও হয় না ফেরা, তাই।দহন ফুরালে নেভে আলোফেরে না কিছুই, শুধুপড়ে থাকে ছাই! খুব বেশি পুড়ে গেছি, খুব। খুব বেশি ডুবে গেছি, ঝড়ে গেছি,ক্ষয়ে গেছি ভাড়ারের

ছেদ

অস্তপাড়ে সন্ত্রস্ত চোখচোখের তারায় সূয্যিডোবার শোকশোকের মাতম পাতায় পাতায় ঝরেঝরা পাতা- তোমায় মনে পড়ে! দিক ফুরালে দিগ্বিদিকের ঘোরেঘরপালানো ভীরুর উঠোন পোড়েপুড়ছে চাতাল, দরজা খোলা নাইপ্রিয় চাবি, তোমার গন্ধ পাই। রাত্রি আসে, তুমুল এলোচুলে বুকের ভেতর উথাল-পাথাল ভুলেজ্বোনাক-স্মৃতি ঝলসে মরে গেলোআমায় ছাড়া- কেমন আছো, আলো? কেমন আছো সন্ধ্যেতারা? কেমন আছো স্বাতী? কেমন আছো ঘুমভাঙানি? শোয়ার ঘরের

তারপর হুট করে গল্পটা বদলে গেলো – ২

মোহ কিংবা মায়ার মাঝে তেমন একটা ফারাক নেই। মোহটা যতক্ষণ না কাটছে, ততক্ষণ তা মায়া। মায়াটা কেটে গেলেই তা মোহ। আর, মোহ কেটে গেলে?একটা পথ আরেকটা পথের বিকল্প হতে পারবে, কিন্তু প্রতিটা পথেরই থাকে কিছু নিজস্বতা। সেটা তার চড়াই-উৎড়াই এ হোক কিংবা রঙ-জল-ঘ্রাণে। তেমনি, কিছু পথ থেকে যায়, পায়ের চাপে আর ছাপে তার বন্ধুরতা মিলিয়ে

আহুতি

ঝড়, অতঃপর, থেমে গেলে চিরতরে সন্ধ্যেরা, আরো আরো সন্ধ্যের মতো কিছুটা ক্লান্ত আর কিছু আহত, মিশে যায় জৈবে, নুনে আর জলে… অপরিচিতের ছায়া, চওড়া দেয়ালে থেকে থেকে বেড়ে ওঠে, সাপডাকা ফুল। ঘ্রাণের সওদা জমে, বোলতার হুলে মধু নয়, শুধু বিষ গাঢ়তর হয়। হারাবার ক্ষতে,ক্ষয়কালে, সব কিছু ফুরাতে ফুরাতে, শুধু, বেড়ে ওঠে ভয়। কই থেকে আলো

খসড়া

শহর কি বোঝে মানুষের মানে, মানুষের মন!মানুষ কি মানে শহুরে পাথরে কতো বুনোঘাসজন্মাতে চেয়ে, তীব্র, ভীষণ ইচ্ছের কার্তুজে,বারুদ সরিয়ে অবহেলা আর অবহেলা দাবী রেখেনোংরা ধুসর ধুলো কেটে আঁকে বিষকাঁটা প্রেম! ফুলে ফুলে গলে জ্যোছনাগন্ধে, একরোখা কংক্রিটসুরকীরা গাঁথে সভ্য গাঁথুনি, সার বেঁধে লাল ইটগ্রহণের চাঁদে বেধে দিতে চা’বে ইতর পলেস্তারাছুটির কাফন মুর্খ হৃদয়ে, এপিটাফ-নামছাড়া! কাকেরা ঠুকরে

অ-

গোধুলীর প্লেন ছুঁয়েছে পায়রাবতীর রানওয়ে।সন্ধ্যের শিডিউল ভাঙা বাসে, টিকেট কি পাবো?রাতের ট্রেন সত্যি কি আর সকালের জংশনে পৌঁছোতে পারে? এই সমস্ত বিচ্ছিন্ন ভাবনার বুনোঘাসেদাগ কেটে ফিরে এলে- অস্বস্তির হুইলচেয়ার,আমার একলা ভোরে শিশির শুকিয়ে যায়;রৌদ্রের কড়া পেগ মুখ ধুয়ে দেয়, অপমানে।সিগ্রেটের ঠোঁট খসে আলতো আগুন আসেচাদর পোড়া গন্ধের কার্নিশ বেয়েমানুষটার চোখে নাবে অসুস্থ ঘুমের শুশুক।বৃষ্টির বেলা

ই-পাসপোর্ট ইতিবৃত্তঃ ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা

পাসপোর্ট পেরেশানিঃ আমার হাতে-লেখা পাসপোর্ট এক্সপায়ার হয়ে যায় ২০১০ এ। তখন সবে MRP চালু হয়েছে। MRP এর ফর্ম ফিলাপ করতে গিয়ে প্রথমেই যে বিপত্তি বাধলো, তা “Md.” নিয়ে! আমার সমস্ত ডকুমেন্টস এ নামের শুরু এমডি(ডট) দিয়ে কিন্তু, এমআরপি তে “ডট(.)” এর কোন যায়গা নেই। শুধু “Md” অথবা ফুল ইলাবোরেশন- “মোহাম্মদ” লিখতে হবে। এই কনফিউশন নিয়ে

বোকা বনসাই

গোরখুড়িয়েরা দরজাতে হাঁটে চুপিঅফলা আঙুলে দাহকাল এলে ফিরেবন্ধ্যা পাথরে বৃষ্টির মাথা খুটেফিরে চলে যায় ফুল-ফসলের দিব্যি।এতটুকু ঘরে সিলিঙের উচ্চতাদু-মানুষ মতো, সেওতো আকাশ! ডামি!বেহায়া নীলেতে চঞ্চুর গল্পরা,ফ্যানের আঘাতে ডানার ধুসর ভাঙি।ক্রেয়ণের চুমু মিশিয়েছো স্কেচে?তারপরে, ডেকে নিলাম, দিচ্ছো বেচে?আমি দেখে যাই অদেখার বাটোয়ারা।মাসোহারা হই নিয়ত খরচ মেপে।বেড়ে উঠি তাই শোকেসে, টেবিলে, দেরাজেমেনে নি’ নিয়ম, ছাঁটাইয়ের যন্ত্রণাতবু শত

শাহবাগ ২০১৩

যে সন্ধ্যেয় আমার হাতে মানুষের রক্ত লাগলো,আমি খুনী হলাম, আমি জানলাম- বিপ্লব মাত্রেই অর্থহীন রক্তপাত কিংবা প্রতি-রক্তপাতের উপলক্ষ। আমি জানলাম, আদর্শ আসলে এক ধরনের অজুহাত, লোভ-ঈশ্বরের সেই নামটি, যার জপ করতে নেই, কিন্তু, যাপনেই সিদ্ধি। সেই রাতে আমি ফিরিনি। কিংবা, তার পরের রাতগুলোতে। যখন ফিরেছি-আমার হৃদয় অন্ধকারের সমার্থ হয়ে গেছে, আমার হাত বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে